সর্বজনীন পেনশনঃ কী, কাদের জন্য, কীভাবে আবেদন করবেন, সুবিধা ও মাসিক চাঁদা

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সমাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার সর্বজনীন পেনশন (Universal Pension) স্কিম চালু করেছে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম কী, কারা, কীভাবে রেজিষ্ট্রেশন বা নিবন্ধন করে এতে যুক্ত হতে পারবেন, সুবিধা কী, কত টাকা দিতে হবে, কত দিন দিতে হবে, কত টাকা জমা দিলে কত টাকা পাওয়া যাবে ইত্যাদি নিয়ে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্ষেপে ইউপেনশন (upension) নামেও পরিচিত।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম কী?

দেশের সকল নাগরিকদের পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় পেনশন কতৃপক্ষের মাধ্যমে যে পেনশন স্কিম চালু করেছে সেটিই সর্বজনীন পেনশন স্কিম (Universal Pension Scheme)। ১৮ (আঠারো) বৎসর তদূর্ধ্ব বয়স থেকে ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর বয়সি সকল বাংলাদেশি নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রণ করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ আগস্ট ২০২৩ খীঃ তারিখে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

একনজরে সর্বজনীন পেনশন স্কিম

অফিসিয়াল নামঃসর্বজনীন পেনশন স্কিম (Universal Pension Scheme)
বাস্তবায়নকারী কতৃপক্ষঃজাতীয় পেনশন কতৃপক্ষ, বাংলাদেশ সরকার
সর্বজনীন পেনশন ওয়েবসাইটঃupension.gov.bd
সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর তারিখঃ
১৭ আগস্ট ২০২৩ খীঃ
মোট পেনশন স্কিমঃ৪ টি (প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা)।
সর্বোচ্চ মাসিক চাঁদাঃ১০,০০০/- টাকা
সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদাঃ১,০০০/- টাকা
চাঁদা প্রদানের সর্বোচ্চ সময়কালঃ৪২ বছর
চাঁদা প্রদানের সর্বনিম্ন সময়কালঃ১০ বছর
সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মাসিক পেনশনঃ৩,৪৪,৬৫৫/- টাকা
সম্ভাব্য সর্বনিম্ন মাসিক পেনশনঃ১,৫৩০/- টাকা

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বৈশিষ্ঠ্য

জাতীয় পেনশন কতৃপক্ষের ওয়েবসাইট (upension.gov.bd) এ উল্লেখিত তথ্য মতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বৈশিষ্ঠ্য নিম্নরূপঃ

  • জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে ১৮ (আঠারো) বৎসর তদূর্ধ্ব বয়স হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর বয়সি সকল বাংলাদেশি নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রণ করতে পারবে;
  • বিশেষ বিবেচনায় ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর উর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং সেইক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হতে নিরবচ্ছিন্ন ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন সেই বয়স হতে আজীবন পেনশন প্রাপ্ত হবেন;
  • বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীগণ এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত হতে পারবেন;
  • প্রত্যেক চাঁদাদাতার জন্য একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পেনশন হিসাব থাকবে;
  • পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ (পচাঁত্তর) বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্ত হবেন;
  • চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান করবার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাহার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে; এবং
  • পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম কাদের জন্য?

জাতীয় পেনশন কতৃপক্ষের মতে, দেশের সর্বস্তরের নাগরিককে সুবিধা দিতে এই সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। বিশেষ করে, গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা দেবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা।

দেশের জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সমাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভশীলতার হার বৃদ্ধি পাবে বিবেচনায় নিয়ে মহান জাতীয় সংসদ কর্তৃক “সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩” পাশ করা হয়েছে এবং গত ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ মহামান্য রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের পর আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত আইনের আলোকে গঠিত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। – জাতীয় পেনশন কতৃপক্ষ

  • জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল শ্রেণী পেশার বাংলাদেশি নাগরিক এই স্কিমে অংশ নিতে পারবে।
  • সর্বজনীন পেনশন স্কিমের অংশ হতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যক।
  • প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নেই তারা চাইলে পাসপোর্ট (Passport) দিয়েও নিবন্ধন করতে পারবেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে তার ক জমা দিতে হবে।
  • যাদের বয়স ৫০ পেরিয়ে গেছে তারাও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে তিনি পেনশন পাবেন টানা ১০ বছর চাঁদা দিয়ে যাওয়ার পর।
  • স্কিম অনুযায়ী ব্যক্তির বয়স ৬০ বছর হলেই তিনি সরকার থেকে পেনশন পেতে শুরু করবেন, তাকে আর চাঁদা দিতে হবে না।
  • কেউ যদি ৫৫ বছর বয়সে এসে স্কিমে অংশ নেন তাহলে ৬৫ বয়স বয়স থেকে তিনি পেনশন পেতে শুরু করবেন।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সমূহ

সরকার মোট ৬টি স্কিমের কথা ঘোষণা করেছে। তবে আপাতত চালু হয়েছে চারটি স্কিম। এগুলোর নাম দেয়া হয়েছে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা। আসুন জেনে নেয়া যাক এই ৪ টি স্কিম সম্পর্কে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সমূহ
সূত্রঃ upension.gov.bd

প্রবাস পেনশন স্কিম (Probash Pension Scheme)

প্রবাস পেনশন স্কিম (Probash Pension Scheme) – বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য। প্রবাস পেনশন স্কিম (Probash Pension Scheme) এর মাসিক চাঁদার হার ৫,০০০/- টাকা, ৭,৫০০/- টাকা ও ১০,০০০/- টাকা। বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী ব্যক্তি চাইলে এই চাঁদার সমপরিমাণ অর্থ তিনি যে দেশে আছেন সে দেশের স্থানীয় মুদ্রায় দিতে পারবেন। আবার দেশে এসে টাকাতেও দিতে পারবেন। যারা এই প্রবাস স্কিমের আওতায় টাকা জমাবেন, তারা প্রয়োজনে প্রবাস স্কিম পরিবর্তনেরও সুযোগ পাবেন।

প্রবাস পেনশন স্কিমের মাসিক চাঁদার হার ও সম্ভাব্য মাসিক পেনশন তালিকা

মাসিক চাঁদার হার৫,০০০ টাকা৭,৫০০ টাকা১০,০০০ টাকা
চাঁদা প্রদানের মোট সময়কাল (বছরে)সম্ভাব্য মাসিক পেনশন (টাকা)
৪২১,৭২,৩২৭২,৫৮,৪৯১৩,৪৪,৬৫৫
৪০১,৪৬,০০১২,১৯,০০১২,৯২,০০২
৩৫৯৫,৯৩৫১,৪৩,৯০২১,৯১,৮৭০
৩০৬২,৩৩০৯৩,৪৯৫১,২৪,৬৬০
২৫৩৯,৭৭৪৫৯,৬৬১৭৯,৫৪৮
২০২৪,৬৩৪৩৬,৯৫১৪৯,২৬৮
১৫১৪,৪৭২২১,৭০৪২৮,৯৪৪
১০৭,৬৫১১১,৪৭৭১৫,৩০২

প্রবাস পেনশন স্কিমে (Probash Pension Scheme) একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪২ বছরে ৫,০০০/- টাকা, ৭,৫০০/- টাকা ও ১০,০০০/- টাকা চাঁদা প্রদান করে প্রতি মাসে যথাক্রমে ১,৭২,৩২৭/- টাকা, ২,৫৮,৪৯১/- টাকা ও ৩,৪৪,৬৫৫/- পেনশন পেতে পারেন। একই হারে সর্বনিম্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান করে প্রতি মাসে যথাক্রমে ৭,৬৫১/- টাকা, ১১,৪৭৭/- টাকা ও ১৫,৩০২/- টাকা পেনশন পেতে পারেন।

প্রবাস পেনশন স্কিম (Probash Pension Scheme)
সূত্রঃ upension.gov.bd

প্রবাস পেনশন স্কিম (Probash Pension Scheme) টি শুধুমাত্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য।

প্রগতি পেনশন স্কিম (Pragati Pension Scheme)

প্রগতি পেনশন স্কিম (Pragati Pension Scheme) বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য। প্রগতি পেনশন স্কিমের ক্ষেত্রেও তিন ভাগে চাঁদার হার নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রগতি পেনশন স্কিম (Pragati Pension Scheme) এর মাসিক চাঁদার হার ২,০০০/- টাকা, ৩,০০০/- টাকা ও ৫,০০০/- টাকা। যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের মালিকও প্রগতি স্কিমে অংশ গ্রহণ করতে পারবে। সেক্ষেত্রে মোট চাঁদার অর্ধেক কর্মচারী এবং বাকি অর্ধেক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বহন করবে।

প্রগতি পেনশন স্কিমের মাসিক চাঁদার হার ও সম্ভাব্য মাসিক পেনশন তালিকা

মাসিক চাঁদার হার২,০০০ টাকা৩,০০০ টাকা৫,০০০ টাকা
চাঁদা প্রদানের মোট সময়কাল (বছরে)সম্ভাব্য মাসিক পেনশন (টাকা)
৪২৬৮,৯৩১১,০৩,৩৯৬১,৭২,৩২৭
৪০৫৮,৪০০৮৭,৬০১১,৪৬,০০১
৩৫৩৮,৩৭৪৫৭,৫৬১৯৫,৯৩৫
৩০২৪,৯৩২৩৭,৩৯৮৬২,৩৩০
২৫১৫,৯১০২৩,৮৬৪৩৯,৭৭৪
২০৯,৮৫৪১৪,৭৮০২৪,৬৩৪
১৫৫,৭৮৯৮,৬৮৩১৪,৪৭২
১০৩,০৬০৪,৫৯১৭,৬৫১

প্রগতি পেনশন স্কিমে (Pragati Pension Scheme) একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪২ বছরে ২,০০০/- টাকা, ৩,০০০/- টাকা ও ৫,০০০/- টাকা চাঁদা প্রদান করে প্রতি মাসে যথাক্রমে ৬৮,৯৩১/- টাকা, ১,০৩,৩৯৬/- টাকা ও ১,৭২,৩২৭/- পেনশন পেতে পারেন। একই হারে সর্বনিম্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান করে প্রতি মাসে যথাক্রমে ৩,০৬০/- টাকা, ৪,৫৯১/- টাকা ও ৭,৬৫১/- টাকা পেনশন পেতে পারেন।

প্রগতি পেনশন স্কিম (Pragati Pension Scheme)
সূত্রঃ upension.gov.bd

প্রগতি পেনশন স্কিম (Pragati Pension Scheme) টি শুধুমাত্র বাংলাদেশের বেসরকারী চাকরিজীবিদের জন্য।

সুরক্ষা পেনশন স্কিম (Surokkha Pension Scheme)

সুরক্ষা পেনশন স্কিম (Surokkha Pension Scheme) টি স্বনির্ভর ব্যক্তিদের জন্য। চাকরিজীবি নন কিন্তু নিজে উপার্জন করেন বা Self Employed, তারা সুরক্ষা পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সার, কৃষক, ব্যবসায়ী, শ্রমিক বা অন্য কর্মজীবি মানুষ যাদের আয় আছে তারা  সুরক্ষা পেনশন স্কিম (Surokkha Pension Scheme) এর আওতায় চাঁদা জমা দিতে পারবেন। সুরক্ষা পেনশন স্কিমে মাসিক চাঁদার হার চার রকম – ১,০০০/- টাকা, ২,০০০/- টাকা, ৩,০০০/- টাকা ও ৫,০০০/- টাকা।

সুরক্ষা পেনশন স্কিমের মাসিক চাঁদার হার ও সম্ভাব্য মাসিক পেনশন তালিকা

মাসিক চাঁদার হার১,০০০ টাকা২,০০০ টাকা৩,০০০ টাকা৫,০০০ টাকা
চাঁদা প্রদানের মোট সময়কাল (বছরে)সম্ভাব্য মাসিক পেনশন (টাকা)
৪২৩৪,৪৬৫৬৮,৯৩১১,০৩,৩৯৬১,৭২,৩২৭
৪০২৯,২০০৫৮,৪০০৮৭,৬০১১,৪৬,০০১
৩৫১৯,১৮৭৩৮,৩৭৪৫৭,৫৬১৯৫,৯৩৫
৩০১২,৪৬৬২৪,৯৩২৩৭,৩৯৮৬২,৩৩০
২৫৭,৯৫৫১৫,৯১০২৩,৮৬৪৩৯,৭৭৪
২০৪,৯২৭৯,৮৫৪১৪,৭৮০২৪,৬৩৪
১৫২,৮৯৪৫,৭৮৯৮,৬৮৩১৪,৪৭২
১০১,৫৩০৩,০৬০৪,৫৯১৭,৬৫১

সুরক্ষা পেনশন স্কিমে (Surokkha Pension Scheme) একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪২ বছরে ১,০০০/- টাকা, ২,০০০/- টাকা, ৩,০০০/- টাকা ও ৫,০০০/- টাকা চাঁদা প্রদান করে প্রতি মাসে যথাক্রমে ৩৪,৪৬৫/- টাকা, ৬৮,৯৩১/- টাকা, ১,০৩,৩৯৬/- টাকা ও ১,৭২,৩২৭/- পেনশন পেতে পারেন। একই হারে সর্বনিম্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান করে প্রতি মাসে যথাক্রমে ১,৫৩০/- টাকা, ৩,০৬০/- টাকা, ৪,৫৯১/- টাকা ও ৭,৬৫১/- টাকা পেনশন পেতে পারেন।

সুরক্ষা পেনশন স্কিম (Surokkha Pension Scheme)
সূত্রঃ upension.gov.bd

সুরক্ষা পেনশন স্কিম (Surokkha Pension Scheme) টি শুধুমাত্র বাংলাদেশের স্বনির্ভর বা Self Employed ব্যক্তিদের জন্য।

সমতা পেনশন স্কিম (Somota Pension Scheme)

সমতা পেনশন স্কিম (Somota Pension Scheme) টি দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসরত স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য। যাদের আয় এখন বছরে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে তারাই কেবল এই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন। সমতা পেনশন স্কিমে চাঁদার হার একটিই – ১,০০০/- টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিমাসে ব্যক্তি দেবে ৫০০/- টাকা আর বাকি ৫০০/- টাকা দেবে সরকার।

সমতা পেনশন স্কিমের মাসিক চাঁদার হার ও সম্ভাব্য মাসিক পেনশন তালিকা

মাসিক চাঁদার হার১,০০০ টাকা (চাঁদাদাতা ৫০০ টাকা + সরকারি অংশ ৫০০ টাকা)
চাঁদা প্রদানের মোট সময়কাল (বছরে)সম্ভাব্য মাসিক পেনশন (টাকা)
৪২৩৪,৪৬৫
৪০২৯,২০০
৩৫১৯,১৮৭
৩০১২,৪৬৬
২৫৭,৯৫৫
২০৪,৯২৭
১৫২,৮৯৪
১০১,৫৩০

সমতা পেনশন স্কিমে (Somota Pension Scheme) একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪২ বছর সময়কালে প্রতি মাসে ৫০০/- টাকা চাঁদা প্রদান করে প্রতি মাসে যথাক্রমে ৩৪,৪৬৫/- টাকা পেনশন পেতে পারেন। একই হারে সর্বনিম্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান করে প্রতি মাসে ১,৫৩০/- টাকা পেনশন পেতে পারেন।

সমতা পেনশন স্কিম (Somota Pension Scheme)
সূত্রঃ upension.gov.bd

সমতা পেনশন স্কিম (Somota Pension Scheme) টি শুধুমাত্র বাংলাদেশের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য।

সর্বজনীন পেনশন রেজিষ্ট্রেশন/নিবন্ধন

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে রেজিষ্ট্রেশন বা নিবন্ধন করতে হবে। সর্বজনীন পেনশন রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করতে বেশ কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করতে হবে।

সর্বজনীন পেনশন ওয়েবসাইট [ইউপেনশন]

পেনশন স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হতে হলে প্রথমেই পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করতে উদ্বোধন করা হয়েছে ‘ইউপেনশন' নামক ওয়েবসাইট (upension.gov.bd)। এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যে কেউ পেনশন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

সর্বজনীন পেনশন ওয়েবসাইট

কীভাবে আবেদন করবেন?

প্রথম ধাপঃ প্রত্যয়ন

নিবন্ধন প্রক্রিয়ার প্রথমেই ‘ইউপেনশন' ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। মেনু থেকে “পেনশনার রেজিষ্ট্রশন” এ ক্লিক করতে হবে।

এরপর একটি পাতা আসবে, সেখানে লেখা থাকবে, ‘প্রত্যয়ন করছি যে আমি সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নই। সর্বজনীন পেনশন স্কিমবহির্ভূত কোনো ধরনের সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে সুবিধা গ্রহণ করি না। আমি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় কোনো ধরনের ভাতা গ্রহণ করি না।'

তবে ভুল তথ্য প্রদান করলে আবেদন বাতিল হবে এবং জমাকৃত অর্থ ফেরতযোগ্য হবে না বলে জানিয়েছে পেনশন কর্তৃপক্ষ।

এরপর ‘আমি সম্মত আছি' অংশে ক্লিক করলে দ্বিতীয় পাতায় গিয়ে নিবন্ধনপ্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। এখানে আবেদনকারীকে প্রবাস, সমতা, সুরক্ষা ও প্রগতি – এই চার স্কিমের মধ্য থেকে প্রযোজ্য স্কিম বাছাই করতে হবে। একই সঙ্গে ১০, ১৩ বা ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, ইমেইল আইডি লিখে দিতে হবে। এরপর পাতার নিচের দিকে থাকা ক্যাপচা লিখে পরের পাতায় যেতে হবে।

উল্লেখ্য, ক্যাপচা দেয়ার পরে আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর ও ই-মেইলে একটি ওটিপি বা গোপন নম্বর আসবে, যা ফরমে পূরণ করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপঃ ব্যক্তিগত তথ্য

নিবন্ধন প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে ব্যক্তিগত তথ্যের পাতা আসবে। সেখানে ব্যক্তির এনআইডি অনুযায়ী এনআইডি নম্বর, ছবি, আবেদনকারীর বাংলা ও ইংরেজি নাম, মাতার নাম, পিতার নাম, বর্তমান ও ঠিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে (যেহেতু আগের পাতায় এ তথ্যগুলো দেয়া আছে)।

তবে এখানে আবেদনকারীর বার্ষিক আয় লেখার পাশাপাশি পেশা, নিজ বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম নির্বাচন করতে হবে। পেশা বাছাইয়ের ঘরে বেসরকারি চাকরিজীবী, ছোট ব্যবসায়ী, ব্যবসা, শিক্ষক, আইনজীবী, দিনমজুর, সাংবাদিক ইত্যাদি পেশার উল্লেখ রয়েছে। সেখান থেকে নিজের পেশা নির্বাচন করতে হবে। সব লেখা সম্পন্ন হলে পরের পাতায় (‘স্কিম তথ্য') যেতে হবে।

তৃতীয় ধাপঃ চাঁদার পরিমাণ ও চাঁদা পরিশোধের ধরন

স্কিম তথ্যের পাতায় মাসিক চাঁদার পরিমাণ ও চাঁদা পরিশোধের ধরন বাছাই করতে হবে। চাঁদা পরিশোধের ধরনের মধ্যে মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক তিনটি অপশন রয়েছে। ধরন বাছাই শেষে ব্যাংক তথ্যের ধাপে যেতে হবে।

চতুর্থ ধাপঃ ব্যাংক হিসাব ও নমিনি

ব্যাংক তথ্যের পাতায় আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবের নাম ও নম্বর, হিসাবের ধরন (সঞ্চয়ী অথবা চলতি), রাউটিং নম্বর, ব্যাংকের নাম ও ব্যাংকের শাখার নাম লিখতে হবে। এরপর পরবর্তী নমিনি তথ্যের পাতায় নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে নমিনিকে যুক্ত করতে হবে। এ সময় নমিনির মোবাইল নম্বর, নমিনির সঙ্গে সম্পর্ক, নমিনির প্রাপ্যতার হারের (একাধিক নমিনি হলে) তথ্য দিয়ে ‘সম্পূর্ণ ফরম' ধাপে যেতে হবে।

পঞ্চম ধাপঃ শেষ ধাপ

‘সম্পূর্ণ ফরম' নিবন্ধনের শেষ ধাপ। এ ধাপে আগে পূরণ করা ব্যক্তিগত তথ্য, স্কিম তথ্য, ব্যাংক তথ্য ও নমিনি তথ্য দেখা যাবে। সেখানে কোনো তথ্য ভুল থাকলে আবার শুরু থেকে গিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হবে। তবে সব তথ্য ঠিক থাকলে সম্মতি দিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এ সময় সম্পূর্ণ আবেদনটি ডাউনলোডও করা যাবে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সুবিধা

জীবনের একটা সময়ে গিয়ে মানুষের কর্মক্ষমতা লোপ পায় এবং মানুষ অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। সরকারী চাকরিজীবিরা অবসরে গেলে সকারের কাছ থেকে প্রতি মাসে পেনশন পান। এর বাইরে যারা বেসরকারি চাকরি করেন বা অন্য পেশার সাথে সম্পর্কিত তাদের জন্য এতদিন পেনশন পাওয়ার কোন সুযোগ ছিল না। সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু হওয়ার পরে এতে অংশগ্রহণ করে দেশের সব সাধারণ মানুষদের সামনে আজ পেনশন পাওয়ার সুযোগ এসেছে।

  • পেনশনের চাঁদা জমা দিতে হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে। আর জমা দেওয়া যাবে অনলাইন ব্যাংক, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান এবং তফসিলি ব্যাংকের যেকোনো শাখার মাধ্যমে।
  • নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাঁদা দিতে না পারলে পরের এক মাসের মধ্যে জরিমানা ছাড়া চাঁদা দেওয়া যাবে। এক মাস পার হলে পরের প্রতিদিনের জন্য ১ শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে হিসাব সচল করা যাবে। মাসের নাম উল্লেখ করে অগ্রিম চাঁদা দেওয়ারও সুযোগ রাখা হয়েছে। চাঁদা মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে দেওয়ারও সুযোগ থাকবে।
  • চাঁদাদাতা নিজের ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, গৃহনির্মাণ, গৃহ মেরামত এবং সন্তানের বিয়ের ব্যয় মেটাতে তাঁর জমা করা অর্থের ৫০ শতাংশ ঋণ নিতে পারবেন, যা শোধ করতে হবে ২৪ কিস্তিতে।
  • সরকার নিজে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের গ্যারান্টি দিবে। প্রত্যেক পেনশনার পাবেন ইউনিক নাম্বার। ঐ নাম্বার দিয়ে সবসময় চেক করতে পারবেন তার অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে।
  • পেনশনারগণ আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তবে কেউ যদি ৭৫ বছর বয়স পূরণ হবার আগেই মারা যান তাহলে তার নমিনি পেনশনারের বয়স ৭৫ হওয়া পর্যন্ত পেনশন সুবিধা পাবেন।
  • আর যদি পেনশনার ১০ বছর চাঁদা দেবার আগেই মারা যান তাহলে তার জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।
  • পেনশনের জন্য প্রতিমাসে জমা দেয়া চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হবে এবং সেই অর্থ কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে। আর মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ হবে আয়কর মুক্ত।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর

সর্বজনীন পেনশন স্কিম আসলে কী বা কীভাবে কাজ করবে- এ ধরনের প্রশ্ন যে কারো মনে আসতে পারে। এখানে এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরা হলো। এই প্রশ্ন ও উত্তর অংশটি নিয়মিত আপডেট করা হবে।

প্রশ্নঃ পেনশন কর্মসূচিতে আবেদন করতে হলে কী কী কাগজপত্র লাগবে?
উত্তরঃ পেনশন-ব্যবস্থার আওতায় আসতে গেলে একজন আবেদনকারীর অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থাকতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি যাঁদের এনআইডি নেই, তাঁরা পাসপোর্টের ভিত্তিতে এই পেনশনে কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবেন। তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এনআইডি সংগ্রহ করে পেনশন কর্তৃপক্ষের কাছে তা জমা দিতে হবে।

প্রশ্নঃ সর্বজনীন পেনশনের বিভিন্ন স্কিমের জন্য চাঁদার হার কত?
উত্তরঃ প্রবাস স্কিমে ৭ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার ও ১০ হাজার টাকা; প্রগতি স্কিমে ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা এবং সুরক্ষা স্কিমে ১ হাজার, ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। শুধু সমতা স্কিমে চাঁদার হার একটি, আর তা হচ্ছে এক হাজার টাকা। এর মধ্যে চাঁদাদাতা ৫০০ ও সরকার ৫০০ টাকা করে দেবে।

প্রশ্নঃ একজন আবেদনকারী কীভাবে নিবন্ধন করতে পারবেন? চাঁদা কোথায় দেবেন?
উত্তরঃ অনলাইনে ফরম পূরণ অথবা সরাসরি সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে নিবন্ধন করা যাবে এবং চাঁদা দেওয়া যাবে। অনলাইনের পাশাপাশি আপাতত সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমেও নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ কেউ যদি অনলাইনে নিবন্ধন করতে না পারেন, তাহলে তিনি সোনালী ব্যাংকে গিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন।

প্রশ্নঃ সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা কি সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবে?
উত্তরঃ সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির আগে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা সরকারি পেনশন স্কিমে অংশ নিতে করতে পারবেন না।

প্রশ্নঃ পেনশন স্কিমে মুনাফাসহ বছরে কত টাকা জমা হলো তা কীভাবে জানা যাবে?
উত্তরঃ চাঁদাদাতা তার পেনশন আইডি দিয়ে ইউনিভার্সাল পেনশন সিস্টেমে প্রবেশ করে সহজেই বছর শেষে মুনাফাসহ জমা হওয়া টাকার পরিমাণ সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারবেন।

প্রশ্নঃ চাকরি পরিবর্তন করলে নতুন পেনশন নম্বর নিতে হবে কি না?
উত্তরঃ চাকরি পরিবর্তন করলে নতুন পেনশন নম্বর গ্রহণ করতে হবে না। শুধু জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।

প্রশ্নঃ চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর তিনি কীভাবে পেনশন পাবেন?
উত্তরঃ চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর তার ব্যাংক হিসাবে অথবা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে মাসিক পেনশন দেওয়া হবে।

প্রশ্নঃ শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করলেই পেনশন স্কিমে অংশ নেওয়া যাবে, নাকি হার্ড কপি জমা দিতে হবে?
উত্তরঃ হার্ড কপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করে মাসিক টাকা জমা দিলেই হবে।

প্রশ্নঃ গৃহিণীরা কোন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন?
উত্তরঃ গৃহিণীরা স্বকর্মে নিয়োজিতদের জন্য প্রযোজ্য সুরক্ষা স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।

প্রশ্নঃ প্রবাস স্কিমে পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করার পর কত দিনের মধ্যে এনআইডি জমা দিতে হবে?
উত্তরঃ এনআইডি তৈরিতে যুক্তিগতভাবে সে সময়ের প্রয়োজন হবে, সেই সময়কালের মধ্যে এনআইডি জমা দিতে হবে।

প্রশ্নঃ জাতীয় পেনশন স্কিমের যাবতীয় ব্যয় কি স্কিমে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের জমানো টাকা দিয়ে মেটানো হবে?
উত্তরঃ না, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের যাবতীয় ব্যয় সরকার বহন করবে।

প্রশ্নঃ কোনো ব্যক্তির কাছে মাসিক চাঁদার টাকা নগদ দেওয়া যাবে কি না?
উত্তরঃ না, কোন ব্যক্তির কাছে চাঁদার টাকা নগদ জমা দেওয়া যাবে না। ব্যাংক, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে চাঁদার টাকা জমা দেওয়া যাবে।

প্রশ্নঃ পেনশন স্কিমে জমা হওয়া টাকার গ্যারান্টর কে হবেন?
উত্তরঃ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সরকারই জমা টাকার গ্যারান্টর।

প্রশ্নঃ চাঁদাদাতা, নমিনি বা নমিনিরা মেয়াদ পূর্তির আগে মারা গেলে জমা টাকা কে পাবেন?
উত্তরঃ সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ও উত্তরাধিকার সনদের ভিত্তিতে উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে জমা টাকা মুনাফাসহ তাকে বা তাদের দেওয়া হবে।

শেষকথা

সর্বজনীন পেনশন স্কিম বা জাতীয় পেনশন স্কিম বাংলাদেশের সরকারি চাকরিজীবী নন এমন সকল মানুষের সামনে পেনশন উপভোগের সুযোগ করে দিয়েছে। ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সমাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় ১৮ বছরের উর্দ্ধ বয়সি যে কোন বাংলাদেশী নাগরিক প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা পেনশন স্কিমের যে কোন একটিতে অংশগ্রহণ করে নিজের বা পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যত আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। লেখাটি তথ্যবহুল মনে হলে বন্ধু বা পরিচিতজনের সাথে শেয়ার করুন।

5/5 - (1 vote)